বাগদাশ বা খাটাশ (Viverra zibetha)

বাগদাশ কে ভাম, ভামবিড়াল,খাটাশ বা গন্ধগোকুল নামে ডাকা হয়ে থাকে। এদের দেহে আকারে বড গন্ধগ্রন্থি থাকে যা তীব্র দুর্গন্ধ ছডায। অনেকে এদের কে ভূল করে মেছো বিড়াল বলে থাকে। মেছো বাঘ এর দেহে থেকে কোন গন্ধ বের হয় না । বাগদাশেরর ইংরেজী নাম The large Indian civet এবং বৈজ্ঞানিক নাম Viverra zibetha । অন্য দিকে মেছো বা ফিশিং ক্যাট এর বৈজ্ঞানিক নাম Felis viverrina । মেছো বাঘের কান ছোট এবং গোলাকার। এদের চোখের পিছন থেকে গলার শেষ পর্যন্ত ৬ থেকে ৮ টি কাল বর্ণের ডোরাকাটা দাগ থাকে। সামান্য বা আলগোছ হলুদে মেশানো ধূসর রঙের চামড়ায় মোটামুটি লম্বালম্বিভাবে কয়েক সারি বা গাড় হলুদ ডোরা রয়েছে। কিন্তু বাগদাশের শরীরের রং গাঢ ধূসর, তাতে হলুদ বা বাদামি আঁচ, সারা শরীরে কালো পটি ও ডোরা। পিঠে কালো লোমের একটি খাড়া শিরা থাকে।

বাগদাশ বা গন্ধগোকুল

বাগদাশ বা গন্ধগোকুল একটি নিশাচর প্রাণী। খাটাশের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে এরাই মানুষের বেশি কাছাকাছি থাকে। দিনের বেলা বড় কোনো গাছের ভূমি সমান্তরাল ডালে লম্বা হয়ে শুয়ে থাকে, লেজটি ঝুলে থাকে নিচের দিকে। মাথা ও শরীরের গডন লম্বাটে, পা খাটো ও মোটা। মাথাসহ দেহ দৈর্ঘে প্রায ৯৫ সেমি, লেজ প্রায ৫৯ সেমি। ওজনে এরা ৯.২ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। মূলত একাকী হলেও প্রজননের সময় স্ত্রী-পুরষ একত্রে থাকে। বছরে সাধারণত দু’বার প্রজনন করে। গর্ভধারণকাল দুই মাসের কিছু বেশি। পুরনো গাছের খোঁড়ল ছানা প্রসবের উপযুক্ত স্থান। কিন্তু খোঁড়লের অভাবে গাছের ডালার ফাঁকে, পরিত্যক্ত ঘর বা ইটের ভাটা, ধানের গোলা, তাল-সুপারির আগায় ছানা তোলে। প্রতিবার ছানা হয় তিনটি। ছানারা চোখ খোলে ১০-১২ দিনে। মা-গন্ধগোকুল দেহের সঙ্গে লেজ মিলিয়ে একটি বৃত্তের সৃষ্টি করে। ছানারা কখনোই বৃত্তের বাইরে যায় না। তবে গন্ধগোকুল ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। আবাসভৃমি ধ্বংস ও হাঁস-মুরগি বাঁচানোর জন্য ব্যাপক নিধনের জন্যই এরা বিপন্ন।

এরা পাখি, ব্যাঙ, সাপ, ছোট ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী যেমন ইদুর, খরগোশ, পাখীর ডিম, কাঁকড়া খেয়ে থাকে। তাছাড়া এরা বিভিন্ন গাছের ফল এবং মূলও খেয়ে থাকে।

Written specially and exclusively by Dr. A. K. M. Nazrul Kabir, Associate Professor, Zoology.

Leave a Reply